চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের ওপর আবারো হামলা করেছেন স্থানীয়রা। রোববার দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর গেট সংলগ্ন জোবরা গ্রামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমাঝোতা করতে গেলে এ হামলা করা হয়।
দুপুর ১টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দুপক্ষের মধ্যে চলছে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। ইটপাটকেল নিক্ষেপ ককটেল বিস্ফরণ ও দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য কামাল উদ্দিন ও প্রক্টর মোহাম্মদ তানভীর হায়দার আরিফসহ ১৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী সাঈদ বলেন, গতকাল সংঘর্ষের পর আজকে দুপুরে যেসকল শিক্ষার্থী দুই নম্বর গেট এলাকায় থাকে তাদের ওপর আক্রমণ করা হয়। আমরা সকালে জিরো পয়েন্টে ছিলাম। পরে দুই নম্বর গেটে তাদের বাঁচাতে আসলে ওরা আবার আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে প্রায় ৩৫ জন আহত। এখানে কোন পুলিশ প্রশাসনের লোক নেই। গতকাল সেনাবাহিনী এসেছিল কিন্তু আজকে সকালে চলে গেছে। ক্যাম্পাসের সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী প্রক্টর বুজলুর রহমানকে ফোন দিলে তিনি আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসায় ব্যস্ত আছে জানি ফোন কেটে দেন।সহকারী প্রক্টর নাজমুল হোসেনকে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এরআগে শনিবার দিবাগত রাত ১টা ৩০ মিনিটের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর গেট সংলগ্ন জোবরা গ্রামে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন স্থানীয়রা। এরপর দুপক্ষের শুরু হয় সংঘর্ষ। এতে প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।
মূলত দুই নম্বর গেট মাছ বাজারে শাহাবুদ্দিনের বাসায় ভাড়া থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাকিফা খাতুন। তিনি বাসায় প্রবেশের শেষ সময়েরর আগেই অর্থাৎ রাত ১১টা ২০ মিনিটের দিকে আসেন। এ সময় তাকে বাসার গেটে ঢুকতে দেয়নি দারোয়ান। এতে দুজনের বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে দারোয়ান নারী শিক্ষার্থীকে মারধর করে। এ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন শিক্ষার্থীরা। মাইকে ঘোষণা দিয়ে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন স্থানীয়রা। পরে শিক্ষার্থীরাও চবির সোহরাওয়ার্দী হলের মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিলে দুপক্ষের শুরু হয় সংঘর্ষে জড়ান। এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। রাত সাড়ে ৩টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৬ গাড়ি সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয় সংঘর্ষস্থলে।চবি মেডিকেলের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মুহাম্মদ টিপু সুলতান বলেন, বহু শিক্ষার্থী আহত অবস্থায় মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন। আমরা তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। যাদের অবস্থা খুবই গুরুতর আমরা তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, আমরা রাত বারোটাতেই আমাদের একাধিক নিরাপত্তা টিম ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় তাদের এক জায়গায় এনে দিক নির্দেশনা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছিল। সময় মতো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতিও ছিল না।